জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, ‘দুর্ঘটনা কিংবা পরিকল্পিত’ ইউক্রেনে যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি সমগ্র মানবজাতির জন্য হুমকি। তিনি এ সময় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে এই সংঘাত পারমাণবিক বিনাশ নিয়ে আসতে পারে।

ইউক্রেনে চলছে রুশ সামরিক অভিযান। রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনো দেশ ইউক্রেনে সেনা পাঠালে চরম মূল্য দিতে হবে। অনেক বিশেষজ্ঞই এই চরম মূল্যকে দেখছেন পারমাণবিক হামলার হুমকি হিসেবে। ফ্রান্স এরই মধ্যে ইঙ্গিত দিয়েছে, শুধু রাশিয়ার কাছেই পারমাণবিক অস্ত্র আছে এমন তো নয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তার মতে, এমনটি হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে। পারমাণবিক যুদ্ধ বা বিশ্বযুদ্ধকে এখন আর অবাস্তব মনে হচ্ছে না বিশ্ববাসীর কাছে।

এবার আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, ‘দুর্ঘটনা কিংবা পরিকল্পিত’ ইউক্রেনে যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি সমগ্র মানবজাতির জন্য হুমকি। তিনি এ সময় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে এই সংঘাত পারমাণবিক বিনাশ নিয়ে আসতে পারে।

গুতেরেস বলেন, ‘পরমাণু সংঘাতের সম্ভাবনা, যা একসময় কল্পনাও করা যেত না, এখন আবার তা সম্ভাবনার রাজ্যে ফেরত এসেছে।’

ইউক্রেন যুদ্ধই হতে পারে পৃথিবীর বিনাশ: গুতেরেস
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। ছবি: সংগৃহীত

তবে সংঘাতের ক্ষেত্রে শুরু থেকেই সতর্ক যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো। রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়ানোর ইচ্ছা নেই পশ্চিমাদের। ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করলেও ন্যাটোভুক্ত কোনো দেশ সেনা পাঠাচ্ছে না। এমন কি ইউক্রেনের নো-ফ্লাই জোন প্রতিষ্ঠার দাবিও প্রত্যাখ্যান করেছে ন্যাটো।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে, ন্যাটোভুক্ত কোনো দেশে ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃত সামান্য আঘাতও বরদাশত করা হবে না।

যদিও ন্যাটোভুক্ত দেশ পোল্যান্ডের সীমান্ত থেকে মাত্র ১৫ মাইল (২৫ কিলোমিটার) দূরে ইউক্রেনের সামরিক ঘাঁটি জাভারোভে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এ ছাড়া আরেক ন্যাটোভুক্ত দেশ রোমানিয়ায় রুশ নির্মিত ড্রোনের সন্ধান পাওয়া গেছে।

পরমাণু সংঘাতের সম্ভাবনা, যা একসময় কল্পনাও করা যেত না, এখন আবার তা সম্ভাবনার রাজ্যে ফেরত এসেছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পর থেকেই পশ্চিমাদের বাধা উপেক্ষা করে পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে চলছে রুশ অভিযান। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ, খারকিভ, মারিওপোল, সুমিসহ প্রধান শহরগুলোতে লড়াই চলছে।

ইউক্রেনকে ‘অসামরিকায়ন’ ও ‘নাৎসিমুক্তকরণ’ এবং দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রক্ষা করার জন্যই এমন সামরিক পদক্ষেপ বলে দাবি করে আসছে রাশিয়া। ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, সম্পূর্ণ বিনা উসকানিতে রাশিয়া হামলা চালিয়েছে। দেশটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়ে আসছে।